ইন্ডিয়া যদি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে হিন্দু মৌলবাদীদেরকে ভোট দেয় আমরা কেন মুসলমানদের ভোট দেই না

ইন্ডিয়া যদি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে হিন্দু মৌলবাদীদেরকে ভোট দিয়ে সরকার গঠন করতে সাহায্য করে তবে ৯০% মুসলমানের দেশে মুসলমানরা কেন মুসলমানদের ভোট দেয়না সরকার গঠন করার লক্ষ্যে ?


ভারতীয়রা হিন্দুরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে মুখে মুখে। কিন্তু ভোটের ব্যালটে সীল মারে হিন্দু প্রার্থীর জন্য। ভারতীয় হিন্দুরা ভালোভাবেই জানে যে শিবসেনা, বজরংবলী আর বাল ঠাকুরের চ্যালারা দিনে দুপুরে মুসলমানদের গলা কাটে, মসজিদ ভাঙে, মুসলমান নারীদের উলঙ্গ করে। তারা করেনা এমন কোনো কাজ নেই। কিন্তু তারপরও হিন্দুরা এই মৌলবাদী হিন্দুদের ভোট দিবে। আমি বলছিনা যে ভারতে সেক্যুলার লোকজন নেই। কিন্তু সেক্যুলার লোকজনরা এমনকি কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত পারেনি গুজরাটে ১৭০০ মুসলিমদের জীবন রক্ষা করতে যেখানে মোদী'র তত্ত্বাবধানে তাদেরকে জবাই করা হয়েছিল।ভারতের নির্বাচনের আগে, মোদী টাইম ম্যাগাজিনে আর ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিনে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে নিজের পশুর মতো কার্যকলাপের কথা প্রায় বলে ফেলেছিলেন।পরিস্থিতি বুঝতে পেরে পুরা সাক্ষাৎকার দিতে অস্বীকার করে। কিন্তু তারপরেও ভারতীয় হিন্দুরা তাদেরকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে ।

ভারতীয় এই মৌলবাদী হিন্দুরা ভারতকে এক থাকতে দেয়নি। কথায় কথায় রায়ট বাজিয়েছে। সেক্যুলার নেতা গান্ধীকে প্রচন্ড ভাবে অসম্মান করে খুন পর্যন্ত করেছে।নেতাজি সুভাষ বসুকেপরপাড় পর্যন্ত পাঠিয়েছে। জোড় করে হিন্দু বিধবাদের সহমরণ প্রথায় জ্বলন্ত পুড়িয়েছে। পরবর্তীতে যুবতী বিধবাদের মন্দিরে নিয়ে ঠাকুরদের সাথে লীলাখেলায় বাধ্য করেছে। নিম্নজাতের অজুহাতে মানুষদের অমানুষের মতকরে ব্যবহার করেছে। কিন্তু তারপরেও হিন্দুরা মৌলবাদী হিন্দুদের ভোট দিয়েছে।
এবার আসি বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলমানদের অবস্থান নিয়ে। আমরা সবাই জানি যে বাংলাদেশের ৯০% মুসলমান। তথাকথিত স্বাধীনতার সময় জামায়াত নামের একটা দল বাংলাদেশেকে পাকিস্তানের সাথে রাখতে চেয়েছে। তারা মনে করেছে যে পাকিস্তানের কাছ থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষা সম্ভব হবে না। তাছাড়া, মুসলমানদের ভিতর আবার কেউ কেউ ইন্ডিয়া'র আসল মতলব বুঝতে পেরে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকে চেয়েছে।পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের মুসলমান বলেই শিকার করেনি। তারা পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের হিন্দুদের কাতারে ফেলে হত্যা রাহাজানি থেকে শুরু করে সব কিছু করেছে। যারা জামায়াতের সমর্থক ছিল তাদের ভিতর কেউ কেউ পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে হাত মিলিয়ে হত্যা রাহাজানি সবই করেছে। কিন্তু জামায়াতের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল হয়নি পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর বর্বরতায় আর ভারতীদের ষড়যন্ত্রে। বাংলাদেশ নামকাওয়াস্তে স্বাধীনতা পেলো। শেখ মুজিব যেহেতু হিন্দুদের চরিত্র ভালোভাবেই জানতেন তাই তিনি ভারতকে উপেক্ষা করেই স্বাধীনতার পর পর পাকিস্তানে ইসলামী শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেন। শেখ মুজিব জানতেন যে তাকে মুসলমান দেশ গুলোর সাথে মিলেমিশে দেশ গঠন করবেন। এই লক্ষ্যে তিনি সকল যুদ্ধাপরাধীদের মাফ করে দেন এবং তাদেরকে দেশ সেবায় অংশ নিতে বলেন।

আমার দৃষ্টিতে জামায়াতিরা পাকিস্তানের প্রতি আদর্শগত ভাবে দেশপ্রেম দেখানোর জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে শিকার করেনি আমরা এখন যেভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতিদের অন্য একটা রাষ্ট্র গঠনে বিরোধিতা করি। আমরা বাংলাদেশিরা কোনোভাবেই মানতে পারিনা যে উপজাতিরা বাংলাদেশ ভেঙে অন্য একটা রাষ্ট্র গঠন করবে। ঠিক একই ভাবে, জামায়াতিরা চায়নি যে পাকিস্তান ভেঙে আরেকটা রাষ্ট্র হোক।

প্রশ্ন হলো, মৌলিবাদি হিন্দুরা কি কোনো অবস্থাতেই জামাতি নেতাদের চেয়ে ভালো ছিল না যোগ্য ছিল ?হিন্দু মৌলবাদীরা জুলুম অত্যাচার সবই করেছে যেমনটি পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ারা জামায়াতিরা করেছে।যদি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে হিন্দু মৌলবাদী এবং জামায়াতিরা একই ধরণের কর্মে লিপ্ত হয় তাদের আদর্শের দোহাই দিয়ে আর হিন্দুরা তাদের ঠাকুরদের সকল কিছু মাফ করে ভোট দিয়ে প্রধান মন্ত্রী বানায় তবে মুসলমানরা জামায়াতিদের ভোট দিয়ে কেন নির্বাচিত করছে না ??হিন্দুরা কি মুসলমানদের চেয়ে বেশি ক্ষমাশীল? যেখানে উচ্চবর্ণের ব্রাম্মন ছোটজাতের বিধবা মহিলাকে জোড় করে সেবাদাসী বানায় তারপরেও ওই সেবাদাসী ওই ব্রাম্মনকে ভোট দিয়ে প্রধান মন্ত্রী বানায় তবে হিন্দুরা ক্ষমার ক্ষেত্রে মুসলমানদের চেয়ে একধাপ এগিয়ে। নতুবা মুসলমানরা আসলেই আবুল (বলদ) গোত্রের। জামায়াতিরা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, পশ্চিমা কুকুরদেরকে সাপোর্ট করেছে। ঠিক এর চেয়েও খারাপ ভাবে হিন্দুরা তাদের জাতির পিতা গান্ধীকে নির্মমভাবে খুন করেছে, সুভাষ বসুকে গুম করে হত্যা করে হত্যা করা হয়েছে। নেহেরু পর্যন্ত আতংকে থাকতেন হিন্দু মৌলবাদীদের কর্মকান্ডে। ওই হিন্দু মৌলবাদীরা আজ পর্যন্ত সে একই কাজ করে আসছে। পক্ষান্তরে, জামায়াতিরা আমাদের দেশের একমাত্র গণতন্ত্র চর্চাকারী রাজনৈতিক দল। যাদের সততা আছে, আদব কায়েদা আছে নীতিবোধ আছে। পাশাপাশি তাদের ত্রুটিবিচ্যুতিও রয়েছে। আমার জানামতে জামায়াতিরা আওয়ামী লীগ বা বিএনপি করেন এমন কোনো নেতাদের চেয়ে নীতিগত ভাবে খারাপ না বরং অনেক ক্ষেত্রে তারা ভালো। তবে আমরা বাংলাদেশী মুসলমানরা কেন হিন্দুদের মতো স্মার্ট বা মহান হতে পারিনা? আমরা আওয়ামী লীগকে সরকার পরিচালনা করতে দেখেছি। বিএনপি ও সরকার পরিচালনা করেছে। জাতীয় পার্টিও সরকার পরিচালনা করেছে।আমি বলবোনা যে জামায়াতিরা সরকার পরিচালনায় ভালো করবে কিন্তু তারা কি হিন্দু মৌলবাদীদের চেয়ে এতো খারাপ যে মুসলমানরাও তাদেরকে দেখলে হিন্দুদের গলার সাথে শুর মিলিয়ে রাজাকার আল বদর আর কুত্তা বলে গালি দেই? আমিতো কখনোই দেখিনি যে একজন হিন্দু তাদের মৌলবাদী সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদকে ইন্ডিয়ার দালাল অথবা পশ্চিমা দালাল বলে গালি দিয়েছে !!!
হিন্দুরা বাংলাদেশী গর্দভ মুসলমানদের ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি শেখায় অন্য মুসলমানকে গালি দেয়ার জন্য। অথচ ওই হিন্দুরা কখনই হিন্দু মৌলবাদকে গালি দেয়না। বরং হিন্দু মৌলবাদকে প্রসারিত করার জন্য সব কিছু করে। পক্ষান্তরে, বাংলাদেশী মুসলমানদের মধ্যে শাহরিয়ার কবীরেদের অভাব নেই। শাহরিয়ার কবিররা ভারতীয় raw এর কাছ থেকে পয়সা খেয়ে অর্ধেক হিন্দুতে পরিণত হইয়েছে। আমাদের দেশে এখন অলমোস্ট স্টাইল হয়ে গেছে কোনো ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দেখলে রাজাকার বা জংগি বলা। অথচ সবাই ভুলে যাই যে ভারতের মোদী মুসলিম বিদ্বেশী হিন্দু মৌলবাদী যে মুসলমানদের খুন করতে চিন্তা পর্যন্ত করবে না।

এই আর্টিকেলটা লেখা আমার জন্য বড়ো কষ্টের ছিল। আমার পুরো পরিবার একাত্তরে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে।বয়জ্যেষ্ঠদের অনেকে প্রাণ দিয়েছে আবার কেউ কেউ পাকিস্তানী বর্বরদের দ্বারা অত্যাচারিত হয়ে পঙ্গুত্ব বরন করেছে। আমি পাকিস্তানিদের দেখলে মাথায় রক্ত উঠে। পাশাপাশি আমি ইন্ডিয়ানদের দেখলেও খুশি হইনা। আমার কাছে এটা পরিষ্কার যে একাত্তরের আগে আমরা পাকিস্তানিদের দ্বারা অত্যাচারিত হয়েছি আর এখন আমরা ইন্ডিয়ার অত্যাচার আর জুলুমের মধ্যে আমাদের মুসলমান পরিচয় হারাতে বসেছি। আমরা এখন হিন্দুদের কাছ থেকে শিখেছি কিভাবে শীষ দিয়ে হিন্দিতে গান গেয়ে একজন পরহেজগার মুসলমানকে রাজাকার কুত্তারবাচ্চা বলে গালি দিতে। আমাদের বিবেক আর আমাদের বাধা দেয় না। গালিটা দিয়ে আমরা স্বাধীনতার শুড়শুড়ি পাই আর ইয়াবা সেবন করি।

জেকব মিল্টন
উই আর দি পিপল
Click Here For Sports News

Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment