যেন ব্যাংকে টাকা জমা রাখাটাই একটা পাপ


চার দফায় বেসিক ব্যাংক পেলো জনগণের করের ৩৩৯০ কোটি টাকা। এই বাজেটেও ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি পূরণে দেয়া হয়েছে ১০০০ কোটি টাকা। অবশ্য কেন এই মূলধন ঘাটতি তা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। একসময়ের এই লাভজনক প্রতিষ্ঠানটিকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। অর্থ কেলেঙ্কারির মূল হোতা থেকে গেছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। স্বয়ং অর্থমন্ত্রীর ভাষ্যমতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার কারণটি রাজনৈতিক। মুশকিল হলো-১. এদেশে রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হয়।
২. রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হয়।

৩. রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনোদিন পরিশোধ হবে না জেনেও জনগণের টাকা ঋণ হিসেবে দেয়া হয়; যার কারণে বাড়ে মন্দ ঋণ এবং এক পর্যায়ে তৈরি হয় মূলধন ঘাটতি।
৪. রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট কিছু পরিবারের একচ্ছত্র মালিকানা নিশ্চিত করতে আইন পরিবর্তন করে এক পরিবার থেকে ২ জনের পরিবর্তে ৪ জন পরিচালক এবং একাধিক্রমে ২ মেয়াদের পরিবর্তে ৩ মেয়াদ অর্থাৎ ৯ বছর পরিচালক থাকার আইন করা হয়।
৫. এখানে মূলধনের উপর আবগারি শুল্ক বা পাপকর বাড়ানো হয় যেন ব্যাংকে টাকা জমা রাখাটাই একটা পাপ।
৬. লুটেরাদের লুটের মাশুল দিতে আমানতের
উপর সুদের হার কমতে থাকে

আর সত্যিকারের ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে ব্যাংক ঋণের উপর সুদের হার বাড়তে থাকে। এতে বাধাগ্রস্ত হয় বিনিয়োগ।
৭. অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের ব্যাংকে জমানো ১ লাখ টাকা তাকে ধনী হিসেবে পরিচিত করে পাপকরের আওতায় আনে যেখানে সোনালী ব্যাংক থেকে লুটেরাদের ৪ হাজার কোটি টাকা লুটকে বলা হয় ঢ়বধহঁঃ অর্থাৎ কিছুই না।
৮. সরকারের স্বেচ্ছাচারী নীতি এবং আইনবহির্ভূত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সরকারি ব্যাংকগুলোতে এখন মূলধন ঘাটতি ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা যার মধ্যে ৯ হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যেই জনগণের করের টাকা থেকে ভর্তুকি দেয়া হয়েছে।
৯. এরই মধ্যে লুট হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ যা প্রাথমিকভাবে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা ছিল এবং যার তদন্ত রিপোর্ট আজও প্রকাশিত হয় নাই।
দুর্নীতি বাংলাদেশে হয়তো নতুন কিছু নয় কিন্তু দুর্নীতিকে সর্বক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লালনপালনের এই নব্য সংস্কৃতি এই সরকার চালু করে গেল।
(ব্যারিস্টার রুমীন ফারহানা: আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ)

Share on Google Plus

About Unknown

0 comments:

Post a Comment