![]() |
একজনের উচ্ছ্বাস হয়তো একটু বেশি আরেকজনের কম স্বামী–স্ত্রীর সম্পর্কে এমন ঘটনায় ছন্দপতন হয় |
দাম্পত্যে উত্তাপ নিরুত্তাপ সব সময় থাকে। একই ছন্দে পুরোটা সময় যায় না। তা-ও যদি আবার দুজন দুই রকম হন। দেখা গেল স্বামী ক্রিকেট খেলা দেখতে পছন্দ করেন, স্ত্রী পছন্দ করেন না। আবার কোনো উৎসবে পয়লা বৈশাখ, পয়লা ফাগুনসহ একটু ছুটি মিললে হয়তো স্ত্রীর বাইরে যেতে ইচ্ছে করে। স্বামীর মনে হয় বাসায় ঘুমাই। হই-হট্টগোলের মধ্যে যাওয়ার দরকার কী। এতে করে দুজনের মধ্যে কখনো কখনো দূরত্ব তৈরি হতে পারে। দুজনে দুজনার হয়ে ওঠেন না যেন।
একেক মানুষের স্বভাবজাত অভ্যাস একেক রকম। কেউ হইচই, বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডা, ছুটি মিললেই বেরিয়ে পড়া পছন্দ করেন। কারও কাছে মনে হয় বাইরে যাওয়ার দরকার কী। পরিবারের সঙ্গে বাড়িতেই বসে থাকি। নিজেদের মধ্যে থাকি।
দিনের পর দিন আরেকজনের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে পাত্তা না দিলে একসময় সঙ্গী ছাড়াই চলার অভ্যাস করবে। সেটিও সঙ্গী হিসেবে আপনার ভালো লাগবে না। রবীন্দ্রনাথের বড় গল্প ‘নষ্টনীড়’-এর নায়িকা চারুলতার কথাই ধরুন। সাহিত্য পছন্দ করত চারু। তার স্বামী ভূপতির তাকে সময় না দেওয়া, তার সাহিত্যচর্চার প্রতি আগ্রহী না হওয়ায় হয়তো অমলের প্রতি একধরনের দুর্বলতা তৈরি হয়েছিল চারুর মনে।
মনোবিদেরাও মনে করেন মানুষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পছন্দ করেন। সবকিছু সবার ভালো লাগবে, তা নয়। সঙ্গীকে যেহেতু ভালোবাসেন ফলে তাঁর আগ্রহের প্রতি কিছুটা আগ্রহী হলে ক্ষতি কী। এতে সঙ্গী নিজেকে অবহেলিত-বঞ্চিত মনে করবেন না। একাকিত্বের হাহাকার মনে আসবে না।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক তাজুল ইসলামের মত হলো, স্বামী বা স্ত্রী কেউ যদি আরেকজনের পছন্দ-অপছন্দকে গুরুত্ব না দেন, উচ্ছ্বাস প্রকাশ না করেন, তাহলে সমস্যা হবেই। একজন প্রাণবন্ত, আরেক চুপচাপ হলে এমনটা হতেই পারে। একদিন না হয় প্রাণবন্ত স্বামীর সঙ্গে একটু মাঠে গিয়ে ক্রিকেট খেলা দেখতে গেলেন। আবার ফুল কিনে দিলে হয়তো টাকা নষ্ট বলে বিরক্তি না দেখিয়ে খুশিমনে নিজেই গ্রহণ করলেন উপহার। এসবে তো কোনো ক্ষতি নেই।
আর যদি সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে তা নিজেদের মধ্যে বা নিজের মধ্যে আটকে রাখা যাবে না। পরস্পরের সঙ্গে কথা বলুন পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে। কিছু বিষয়ে মতৈক্যে আসতে হবে। আগ্রহের জায়গা একই না হলেও শ্রদ্ধা থাকলে কোনো সমস্যা হয় না।
সঙ্গী ব্যস্ত থাকলে যা করতে পারেন
* গতানুগতিক কাজের বাইরে আরও কাজ করুন।
* যদি অতিরিক্ত উদ্বেগ, চাপে থাকেন ভালো ঘুম দিন, মেডিটেশন করুন, ইয়োগা করুন।
* জীবনের ও চারপাশের সব দিকে নজর রাখুন। চারপাশে প্রতিদিন সুখী হওয়ার, মুগ্ধ হওয়ার অনেক কিছু আছে।
0 comments:
Post a Comment